২৪খবরবিডি: '১০ ডিসেম্বর বিএনপির পূর্বঘোষিত ঢাকা বিভাগীয় গণসমাবেশ কেন্দ্র করে ছড়াচ্ছে উত্তাপ। বিএনপির পছন্দের নয়াপল্টনে সমাবেশের অনুমতি দিতে নারাজ সরকার। পুলিশ প্রশাসন রাজধানীর সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে ২৬ শর্তে সমাবেশ করার অনুমতি দিয়েছে। ফলে গণসমাবেশের স্থান নিয়ে সংকট কাটেনি।'
'সরকারের পক্ষ থেকে বলা হচ্ছে, বিএনপিকে সহযোগিতা করার উদ্দেশ্যেই সোহরাওয়ার্দী উদ্যান বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। বিএনপির পক্ষ থেকে জানিয়ে দেওয়া হয়েছে, সোহরাওয়ার্দী উদ্যান নয়, নয়াপল্টন বিএনপি অফিসের সামনেই গণসমাবেশ করবে। এ নিয়ে আওয়ামী লীগ ও বিএনপির বিপরীতমুখী বক্তব্যে জনমনে সৃষ্টি হয়েছে উদ্বেগ-উৎকণ্ঠার। তথ্যমন্ত্রী এবং আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক হাছান মাহমুদ গতকাল সচিবালয়ে এক অনুষ্ঠানে বলেছেন, বিএনপিকে সহযোগিতার উদ্দেশ্যেই সোহরাওয়ার্দী উদ্যান বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। তিনি বলেন, তারা যদি চূড়ান্তভাবে নয়াপল্টনেই সমাবেশ করার জন্য তাদের অবস্থান ব্যক্ত করে, সে ক্ষেত্রে সরকার কঠোর অবস্থান ব্যক্ত করবে। বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর গতকাল নয়াপল্টনে এক সমাবেশে বলেন, বিএনপির ঢাকার সমাবেশ নয়পল্টনেই হবে। সরকারের উদ্দেশে তিনি বলেন, সংঘাতের পথে যাবেন না, উসকানি দেবেন না। দয়া করে সিদ্ধান্ত বদল করে নয়াপল্টনে বিএনপির শান্তিপূর্ণ সমাবেশের ব্যবস্থা করুন।'
যে কারণে সোহরাওয়ার্দীতে সম্মত নয় বিএনপি : 'দলটির দায়িত্বশীলরা বলছেন, সোহরাওয়ার্দীতে সমাবেশের জন্য ছোট প্রবেশ গেট, সংকীর্ণ জায়গা এবং আওয়ামী লীগের স্থায়ী মঞ্চ থাকাটা হচ্ছে প্রধান বাধা। এত মানুষ ছোট গেট দিয়ে ঢোকা এবং বের হওয়া কঠিন। তারা বলেন, সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে বনায়ন ও বিভিন্ন স্থাপনার কারণে সমাবেশস্থলের
'১০ ডিসেম্বর নয়াপল্টন পাবে না বিএনপি'
জায়গা সংকুচিত হয়ে গেছে। এ ছাড়া সমাবেশের পাঁচ-ছয় দিন আগে থেকে মঞ্চ তৈরির কাজ করতে হয়। সেক্ষেত্রে ছাত্রলীগের কাউন্সিল ৬ তারিখ হলেও পরবর্তী তিন দিনে বিএনপির সমাবেশের জন্য সব প্রস্তুতি সম্পন্ন করা অসম্ভব। এসব কারণে বিএনপি সোহরাওয়ার্দীর বদলে নয়াপল্টনে তাদের দলীয় কার্যালয় এলাকায় গণসমাবেশ করতে চায়।'
ছড়াচ্ছে উত্তাপ : '১০ ডিসেম্বর ঘিরে সব আলোচনার কেন্দ্রে রয়েছে সমাবেশের ভেন্যু। গত কিছুদিন ধরে রাজনীতির মাঠে উত্তাপ ছড়াচ্ছে '১০ ডিসেম্বর'। এতে বিএনপি ১০ লাখ লোকের জমায়েত করতে চায়। জানতে চাইলে বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী আহমেদ বলেন, এটি হারানো গণতন্ত্রকে পুনঃপ্রতিষ্ঠা করার সমাবেশ। নয়াপল্টনেই বিএনপির ঢাকা বিভাগীয় গণসমাবেশ হবে। বিএনপির সহসাংগঠনিক সম্পাদক শরিফুল আলম বলেন, আমাদের পার্টির মহাসচিবসহ কেন্দ্রীয় নেতারা জানিয়েছেন নয়াপল্টনে গণসমাবেশ অনুষ্ঠিত হবে। আমরা সেভাবেই আমাদের প্রস্তুতি গ্রহণ করছি। কর্মসূচিকে ঘিরে এখন পর্যন্ত আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে যেসব বক্তব্য এসেছে, তাতে ক্ষমতাসীন দল এবং বিএনপির মধ্যে মুখোমুখি অবস্থানেরই আভাস পাওয়া যাচ্ছে। বিএনপিকে যে সহজে ছাড় দেওয়া হবে না, সে ইঙ্গিত পাওয়া যায় আওয়ামী লীগের নেতাদের সাম্প্রতিক বক্তব্যে। বিএনপির এ সমাবেশের আগের দিন জাতীয় মসজিদ বায়তুল মোকাররমের দক্ষিণ গেটে সমাবেশ করবে ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগ। তবে সোহরাওয়ার্দীতে ৮ ও ৯ ডিসেম্বর ছাত্রলীগের সম্মেলনের যে তারিখ নির্ধারিত হয়েছিল তা পরিবর্তন করে নতুন তারিখ নির্ধারণ করা হয়েছে ৬ ডিসেম্বর। ১০ ডিসেম্বর ঘিরে আওয়ামী লীগ নির্দিষ্ট কোনো কর্মসূচি না দিলেও রাজধানীর প্রতিটি ওয়ার্ড ও থানা আওয়ামী লীগ এবং ভ্রাতৃপ্রতিম ও সহযোগী সংগঠনগুলোকে সক্রিয় থাকার নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। বিএনপির সূত্র জানায়, তারা ডিএমপির সিদ্ধান্ত প্রত্যাখ্যান করবে। সেটা তাদের যুক্তিসহ লিখিতভাবে ডিএমপিকে জানাবে নাকি সংবাদ সম্মেলন করে বলবে, সেই সিদ্ধান্ত গতকাল পর্যন্ত হয়নি। ফলে যতই দিন এগোচ্ছে, তত উদ্বেগ-উৎকণ্ঠা বাড়ছে।'